উত্তরঃ- নামায হলো আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক একটি ফরয ইবাদত। নবী (সাঃ) বলেছেন-“ইসলাম ও কুফরির মধ্যে পার্থক্যকারী হচ্ছে নামায“। তিনি আরো বলেছেন- “ইচ্ছাকৃতভাবে নামায ছেড়ে দেওয়া কুফরী” | The prayer is an obligatory faraz ibadat by Allah Tayala. Nabi (S) said, the prayer is distinction between islam and kufar. He also said, To give up prayer willfully is kufri.
নবী করীম (সাঃ) এর এই বক্তব্য হতে বুঝা যাচ্ছে নামায কখনো ছাড়া যাবে না। অপরদিকে নামায যথাসময়ে আদায়ের ব্যাপারে প্রিয় নবী (সাঃ) কর্তৃক এত সর্তকতা ও ফযিলত বর্ণনার পরও, বিভিন্ন কারণে মানুষের নামায কাযা হয়ে যায়। কারণবশত যদি যথাসময়ে নামায পড়তে না পারা যায়, তাহলে পরবর্তী নামাযের ওয়াক্ত শেষ হওয়ার আগে আদায় করাকে কাযা বলে।
কাযা নামাযের প্রকারভেদঃ– নামাযের কাযা আদায়ের সুবিধার্থে কাযা নামাযকে দুটি ভাগ করা হয়েছে। যেমন ফাওয়ায়েতে কালীল ও ফাওয়ায়েতে কাছির।
★ফাওয়ায়েতে কালিলঃ পাঁচ ওয়াক্তের কম নামায তড়ক(কাযা) হওয়া। এ অল্পসংখ্যক নামায কাযাকে ফাওয়ায়েতে কালীল বা অল্প কাযা বলে বিবেচনা করা হয়।
★ফাওয়ায়েতে কাছিরঃ বেশি ওয়াক্ত নামায তরক(কাযা)হওয়। ৫ ওয়াক্তের বেশি কাযা হয়ে যাওয়া। তা যতদিনেরই হোক না কেন তা ফাওয়ায়েতে কাছির’ বা বেশি নামাযের কাযা হিসেবে গন্য হবে।
নামাজের কাযা আদায়ের নিয়ম: পাচ ওয়াক্তের কম নামায কাযা হলে, তা প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাযের পূর্বেই আাদায় করে নেওয়া। আর যদি পাচ ওয়াক্তের বেশি নামায কাযা থাকে, তাহলে তা ধরাবাহিকভাবে ঐ ওয়াক্ত নামাযের সঙ্গে পড়া।
কাযা আদায় যে বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখতে হবে। তা হলোঃ
1.নামাযের কাযা আদায়ের কথা ভুলে গেলে,
2.নির্ধারিত ওয়াক্তের নামাযের সময় সংকীর্ণ হলে,
3.নামাযের কাযা পাঁচ ওয়াক্তের বেশি হলে,
ঐ সকল কারণে নামাযের পরেও কাযা পড়া যাবে।
আর, পাচঁ ওয়াক্ত বা তার কম ওয়াক্তের নামায ছুটে গেলে, তা ধারাবাহিকভাবে কাযা আদায় করতে হবে। আগের নামায আগে, পরের নামায পরে পড়তে হবে। যেমনঃ
কোনো ব্যক্তির ফজর ও যোহরের নামায কাযা হলে, আছরের নামায আদায়ের পূর্বে প্রথমে ফজরের নামায কাযা আদায় করবে। তারপর যোহরের নামায কাযা আদায় করতে হবে। তারপর আছরের ওয়াক্তিয়া নামায আদায় করতে হবে।
কাযা আদায়ে যে বিষয়টি জানা থাকা আবশ্যকঃ
১. ফরজ নামাযের কাযা আদায় করা হল ফরয।
২. ওয়াজিব নামাযের কাযা আদায় করা হল ওয়াজিব।
৩. সুন্নত নামাযের কাযা পড়তে হয় না। তবে ফজরের সুন্নত নামাযের কাযা আদায় করতে হবে। কাযা আদায়ের সময় হলো জোহরের নামাযের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত। যদি জোহরের ওয়াক্ত হয়ে যায়, তাহলে তা আর পড়তে হবে না।
৪. বলা হয়েছে যে, নামাযের কাযা যদি জামায়াতে আদায় করা হয়, তাহলে ইমাম সূরা জোরে জোরে পড়বে। তবে যোহর ও আছরের সূরা চুপেচুপে পড়বে।
৫. এক মাস বা তার চেয়ে বেশি দিনের নামাযের কাযা হয়ে গেলে, এই নামাযের কাযা নির্ধারিত ওয়াক্তের সঙ্গে সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে আদায় করে নিতে হবে।
৬. জীবনে যে ব্যক্তি কোন দিন নামায পড়ে নি বা কত ওয়াক্ত নামায কাযা করেছে সেই হিসাব না জানে, তাহলে উক্ত ব্যক্তি যখন কাযা নামায আদায় করতে চাইবে, তখন সে ব্যক্তি প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাযের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাযের কাযা একের পর এক আদায় করতে হবে। এভাবে নামায আদায় করাকে “ওমরি বা উমরি” কাযা বলা হয়। এভাবে নামাযের কাযা আদায়ে রয়েছে অনেক সওয়াব।
এখানে একটি বিষয় হলো, নামাযকে আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন মানুষের জন্য ফরয করেছেন।তাই নামায কখনো কাযা করা যাবে না। বিশেষ কারনে নামায কাযা হতে পারে। যেমনঃ অসুস্থ থাকলে।
কিন্তু যে ব্যক্তি সুস্থ আছেন তার জন্য সব সময় সময়মত নামাজ আদায় করা ফরয। এমনও বলা হয় যে- কোন এক ব্যক্তি যদি সমুদ্রের পানিতে পড়ে যায় এবং এক চিলতে কাঠকে আশ্রয় করে কোনমতে বেঁচে থাকে তখনও যদি নামাযের সময় হয় তাহলে তার জন্য নামায ফরয। আরো বলা হয়েছে যে, কোনো ব্যক্তিকে জঙ্গলের মধ্যে একটি বাঘ তাড়া করেছে এবং জীবন বাঁচাতে ঐ ব্যাক্তি ছুটছেন, তখন যদি নামাযের সময় হয়, তাহলে এমতাবস্থায় তার উপর নামায পড়া ফরয।
অর্থাৎ হাদিস শরীফ হতে যেসব তথ্য পাওয়া যায় তাতে স্পষ্ট বুঝা যায়, নামায সব সময় সময়মত আদায় করা ফরয। সেটি কখনো কোনো অবস্থায় কাযা করা যাবে না।
নামাজ সম্পর্কিত খুবই সুন্দর একটি লেখা। নামাজের জন্য ঠিক ভাবে ওজু করা জরুরী। ভবিষ্যতে অযুর গুরুত্ব সম্পর্কিত পোস্টের অপেক্ষায় রইলাম।