মাসিক (হায়েজ) অবস্থায় আমল : জিকির-আযকার, দোয়া-দুরুধ করার বিধান

আমরা সাধারণত কোনো মহিমান্বিত রাতে প্রত্যেকেই সালাত আদায়, কুরআন তিলায়াত, দুয়া-জিকির ও দান-খয়রাত ইত্যাদির মাধ্যমে সাড়া রাত জেগে ইবাদত করি কিন্তু হায়েয-নেফাসগ্রস্থ নারীদের কি করনীয় বা তারা কি কি ইবাদত করতে পারবে, সেটা আমরা অনেকেই জানি না, সঠিক মত অনুযায়ি তারাও এ রাতগুলোতে সব ইবাদতই করতে পারবেন শুধু নামায আদায় ও কুরআন তিলায়ত করতে পারবেন না। নিম্নে দলীলসহ বিস্তারিত আলচনা করা হলোঃ

মাসিক অবস্থায় আমল : তাসবীহ-তাহলীল, জিকির-আযকার, দোয়া-দুরুধ পড়ার বিধান

মাসিক (হায়েজ) চলাকলীন সময় জিকির-আযকার করা, দুরুধ শরীফ পড়া, ওযীফা পড়া, বিভিন্ন দোয়া পড়া যায়। এমনকি এসময় কুরআনে কারীমের দোয়ার আয়াতগুলোও দোয়া হিসেবে পড়া যাবে। তবে কুরআনের তিলাওয়াত হিসেবে পড়া যাবে না। তথ্যসূত্র– ফাতওয়ায়ে আলমগীরী, ফাতওয়ায়ে রাহীমীয়া।

দলীলঃ ১) দাঁড়িয়ে, বসে, শুয়ে, ওযূহীন ও (বীর্যপাত বা সঙ্গম-জনিত) অপবিত্র অবস্থায় এবং মহিলাদের মাসিক অবস্থায় আল্লাহর যিকির করা যায়। যেমনঃ আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বক্ষণ (সর্বাবস্থায়) আল্লাহর যিকির করতেন।’ (মুসলিম-৩৭৩)  

২) অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, عَنْ مَعْمَرٍ قَالَ: سَأَلْتُ الزُّهْرِيَّ، عَنِ الْحَائِضِ وَالْجُنُبِ أَيَذْكُرَانِ اللَّهَ؟ قَالَ: نَعَمْ، قُلْتُ: أَفَيَقْرَآنِ الْقُرْآنَ؟ قَالَ: لَا.   মা‘য়মার (রাহ.) বলেন, আমি যুহরী রাহ.- কে জিজ্ঞাসা করলাম, ঋতুমতী নারী ও যার উপর গোসল ফরয হয়েছে সে আল্লাহর যিকির করতে পারবে? তিনি বললেন, হাঁ, পারবে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কুরআন তিলাওয়াত করতে পারবে? তিনি বললেন, না। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ১৩০২

৩) ইবরাহীম নাখায়ী (র) বলেন- عَنْ إِبْرَاهِيمَ قَالَ: الْحَائِضُ وَالْجُنُبُ يَذْكُرَانِ اللَّهَ وَيُسَمِّيَانِ.   ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন, ঋতুমতী নারী ও যার উপর গোসল ফরয হয়েছে সে আল্লাহর যিকির করতে পারবে এবং বিসমিল্লাহও পড়তে পারবে। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ১৩০৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/১৬৫; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাল মারাকী ৭৭; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৯৩

সতরাং বুঝা গেল নারীদের নেফাস (বাচ্চা প্রসবের পর যে স্রাব যায় তাকে নেফাস বলে), হায়েয তথা মাসিক অবস্থায় আমল সমূহ হচ্ছে যেকোনো জিকির করা, দুরুধ পড়া, এমনকি কুরআন মাজীদে বর্ণিত দোয়াও করতে পারবে। তবে তেলাওয়াত হিসেবে না। অর্থাৎ নামায, কোরআন তেলাওয়াত ও তাওয়াফ ছাড়া বাকি সব ধরণের আমল করতে পারবে।

আরও গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পড়ুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!