অটোমাইগ্রেশন কি? অটো মাইগ্রেশন নাকি আবেদন করবে?

একাদশ শ্রেণীতে অটোমাইগ্রেশন কি? কিভাবে অটো মাইগ্রেশন করতে হয়? কোনটার গুরুত্ব বেশি? মাইগ্রেশন করবেন নাকি আবেদন করবেন? আপনাদের আজ বুঝিয়ে দিব একাদশ শ্রেণির অটোমাইগ্রেশন সম্বন্ধে বিস্তারিত খুঁটিনাটি তথ্য

অটোমাইগ্রেশন কি?

একাদশ শ্রেণির মাইগ্রেশনকেই মূলত অটোমাইগ্রেশন বলা হয়। আর একাদশ শ্রেণির মাইগ্রেশন মানে হচ্ছে কলেজ পরিবর্তন করা। যেহেতু মাইগ্রেশন করতে আলাদাভাবে কোনো আবেদন করতে হয় না, তাই এটাকে অটোমাইগ্রেশন বলা হয়।

আরও দেখ : একাদশ শ্রেণিতে মাইগ্রেশন হওয়ার সম্ভাবনা কত?

মাইগ্রেশন কখন ও কিভাবে করবে?

একাদশ শ্রেণির (৩য় মেধাতালিকা ব্যতিত) ১ম ও ২য় মেধা তালিকার ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর কোনো শিক্ষার্থীর পছন্দের কলেজ না আসলে সে মাইগ্রশন করতে পারবে। অর্থাৎ আপনি যদি নতুন করে আবেদন করতে না চান তাহলে আপনাকে অটো মাইগ্রেশন করতে হবে। আর ভর্তি নিশ্চায়ন ফি দিলেই মাইগ্রেশন অটো চালু হয়ে যাবে।

আরও দেখুন : ভর্তি নিশ্চায়ন করার নিয়ম

মাইগ্রেশন করার সুবিধা

একটা বিষয় লক্ষ্য রাখবেন মাইগ্রেশন করলে একটা কলেজ নিশ্চিত ভর্তির জন্য কনফার্ম হয়ে যাবে আর নতুন করে আবেদন করলে রেজাল্ট বের হওয়ার পর চান্স হলে নিশ্চিত হতে হবে। তাছাড়া আপনি তো আপনার পছন্দমত একের পর এক কলেজ চয়েজ দিছেন, তাহলে আপনার যেটাই আসুক মাইগ্রেশন করে নেওয়া ভালো।

নতুন করে আবেদন করার সুবিধা

যদি কেউ ভালো ভাবে যাচাই বাছাই না করে কলেজ চয়েজ করে এবং রেজাল্ট বের হওয়ার পর মনে করে তার জিপিএ কম হওয়ার কারণে মাইগ্রেশন করলেও পছন্দের কলেজ আসবে না, তাহলে সে চাইলে নতুন করে ১০ টি কলেজে আবেদন করতে পারবে। এতে লাভ এটাই যে পছন্দ বা ভিন্ন কলেজে চান্স হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

তবে যদি পছন্দের কলেজ আগেরটাই হয়, তাহলে নতুন করে আবেদন করতে হবে না। মাইগ্রেশন করলেই হবে। কেননা আগের কলেজে নতুন করে আবেদন করা আর মাইগ্রেশন করা একই কথা।

মনেকরুন, কেউ ক, খ, গ, ঘ, ঙ নামক কলেজে আবেদন করে গ নামক কলেজে চান্স পেয়েছে। এমতাবস্থায় সে পুণরায় আবেদন করে ক, খ, চ, ছ, জ নামক কলেজ চয়েজ দিতে চায়, তাহলে তার নতুন করে আবেদন করার কোনো দরকার নেই।

কারন আগের আবেদনেই ত তার পছন্দের কলেজ অথবা কলেজ আছেই, তাহলে হুদাই ১৫০ টাকা খরচ করাতে কোনো লাভ আছে? তাছাড়া পরেরবার আরও খারাপ রেজাল্ট আসতে পারে অর্থাৎ চ, ছ বা জ তে চান্স আসতে পারে। নিচে আরও বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। পড়তে থাকুন……

কোনটার গুরুত্ব বেশি? মাইগ্রেশন নাকি আবেদন?

একটা বিষয় ব্যতিত মাইগ্রেশন বা নতুন করে আবেদন দুটোই সমান। যে একটা বিষয়ের জন্য আপনি নতুন করে আবেদন করতে পারবেন সেটা একটু জটিল। চলো বিস্তারিত বুঝে নেই :

প্রথমে বুঝে নেই সমান বলতে কি?

মাইগ্রেশনকারী ও আবেদনকারী উভয়কেই জিপিএ, মোট নম্বর বা (প্রয়োজনে) নির্দিষ্ট কয়েক বিষয়ের নম্বর তুলনা করে ২য় বা ৩য় মেধাতালিকার রেজাল্ট দিবে। সহজ কথায় উভয়কেই একই পাল্লায় রেখে রেজাল্ট দিবে। তখন যে এগিয়ে থাকবে সেই প্রাধান্য (Priority) পাবে অর্থাৎ পছন্দের কলেজে চান্স পাবে।

তবে চান্স হওয়ার ক্ষেত্রে উভয়ের মধ্যে ভিন্নতা থাকতে পারে। মূলত সেটা কলেজ চয়েস দেয়ার উপর নির্ভর করে। মাইগ্রেশনকারী হোক বা ২য় বা ৩য় পর্যায়ে আবেদনকারী হোক কলেজ চয়েস সঠিকমত না দিলে কোনোটাতেই চান্স পাবেন না।

আবার দেখা যাবে আপনি মাইগ্রেশনে চান্স পেয়েছেন কিন্তু আপনার মত সেইম জিপিএ নিয়ে আরেক স্টুডেন্ট ২য় পর্যায়ে আবেদন করে চান্স পায় নাই। আবার কখনো এর উল্টো হতে পারে। অর্থাৎ আপনার মত সেইম জিপিএ নিয়ে আরেকজন নতুন করে আবেদন করায় তার পছন্দের কলেজে চান্স হইছে কিন্তু আপনার মাইগ্রেশনে কোনো পছন্দের কলেজ আসলো না।

এমন হওয়ার কারণ কি?

এটার মূল সমস্যা কলেজ চয়েস লিস্ট। আপনি যদি কম মার্ক নিয়ে অথবা বেশি প্রতিদ্বন্দিতামূলক ও কম সিট থাকা কলেজ চয়েজ দেন, তাহলে চান্স না হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এতে করে নতুন করে আবেদন করলেও লাভ হবে না। এটাই হচ্ছে মেইন পয়েন্ট।

এখন কি করবে? মাইগ্রেশন নাকি নতুন করে আবেদন?

এখন যদি দেখেন ১ম পর্যায়ে আবেদনের সময় আপনার দেয়া কলেজ গুলো বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক এবং আপনার জিপিএ দিয়ে ঐসব কলেজে চান্স পাওয়ার সম্ভাবনা খুভই কম, তাহলে মাইগ্রেশন বা ভর্তি নিশ্চায়ন না করে নতুন করে (কম প্রতিদ্বন্ধিতামূলক কলেজ গুলোতে) আবেদন করতে হবে।

আর যদি দেখেন চান্স পাওয়ার সম্ভাবনা মোটামোটি আছে এবং কলেজের সংখ্যাও ৪-৫ টা আছে তাহলে মাইগ্রেশন করে নিবেন। উদাহরণ সহ আবার নিম্নে দেখুন:

১. ক সরকারি কলেজ (৫.০০)৬. চ বেসরকারি কলেজ (৪.০০)
২. খ সরকারি কলেজ (৫.০০)৭. ছ বেসরকারি কলেজ (৩.৫০)
৩. গ সরকারি কলেজ (৪.৫০)৮. জ বেসরকারি কলেজ (৩.০০)
৪. ঘ সরকারি কলেজ (৪.৫০)৯. ঝ বেসরকারি কলেজ (২.৫০)
৫. ঙ সরকারি কলেজ (৪.০০)১০. বেসরকারি কলেজ (২.০০)

ব্যাখ্যা : মনে করুন আপনার উপরোল্লিখিত তালিকার ৬ নম্বর কলেজে চান্স হয়েছে এবং আপনার জিপিএ ৪.০০ বা ৪.৫০ বা মাঝামাঝি। তাহলে আপনি মাইগ্রেশন করবেন। কেননা পয়েন্ট এর দিক দিয়ে আপনি ৫ বা ৪ নং কলেজে চান্স পাওয়ার যোগ্য।

আর যদি আপনি উক্ত তালিকার ৭ নং কলেজে চান্স পান আর আপনার পয়েন্ট ৩.৫০ হয় তাহলে মাইগ্রেশন করলে লাভ হবে না। এমতাবস্থায় আপনাকে নতুন করে আবেদন করতে হবে। এমন সব কলেজ চয়েজ দিতে হবে যাতে আপনার পছন্দমত হয় আবার চান্সও পাও। তাই প্রত্যেক কলেজের ভর্তি যোগ্যতা দেখে আবেদন করতে হবে।

আরও দেখুন : বিভিন্ন কলেজে আবেদন করার যোগ্যতা

আশাকরি একাদশ শ্রেণীর মাইগ্রেশন ও নতুন করে আবেদন করার সুবিধা ও অসুবিধা বুঝতে পারবেন।তারপরও কোনোকিছু না বুঝে থাকলে কমেন্ট করতে পার অথবা আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জিজ্ঞাসা করতে পার।

পোস্টটি সর্বশেষ আপডেট করা হয়েছে ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ, সকাল ০৭ টা ১৬ মিনিটে।

18 thoughts on “অটোমাইগ্রেশন কি? অটো মাইগ্রেশন নাকি আবেদন করবে?”

  1. Rushmila Ferdousi

    Sir ami 4.83 peyechi..ekhn ami ki migration Korbo naki abedon Korbo?konta korle vlo hobe??ar ami non govt college e chance paichi ekhn ami ki migration ba abedon korle govt college e aste parbo??
    Iktu janaben plz…💛

    1. যদি তোমার উপরের কলেজগুলোর কোনো একটার মিনিমাম যোগ্যতা 4.50 হয়, তাহলে মাইগ্রেশন করতে পার।

    2. স্যার আমার ২য় চয়েস আসছে। আমার পয়েন্ট ৪.০৬। আর আমার প্রথম চয়েস এর কলেজে সর্বনিম্ন পয়েন্ট চায়ছে ৪.০০। এখন কি আবেদন করবো নাকি ওইটা কনর্পম করতাম।। আকটু তারাতাড়ি জানাবেন কারন আমি এখনও কনফার্ম করি নাই। plz.plZ

      1. যদি নতুন করে আবেদন করার সময় আবার ১ম প্রথম চয়েজে ঐ কলেজ (যেটা প্রথমবার দিয়েছিলে) দাও তাহলে মাইগ্রেশন করাই বেটার। এতে রিস্ক কম থাকে এবং টাকাও বাচে।

    3. স্যার,আমি জিপিএ ৫ পেয়েছি। আমি এখন চট্টগ্রাম নৌবাহিনী কলেজে চান্স পেয়েছি। আমার প্রথম চয়েস ইস্পাহানি, দ্বিতীয় চয়েস ক্যান্ট পাবলিক ছিল। এখন আমি কিভাবে মাইগ্রেশন করব? আমাকে জানাবেন প্লিজ।

      1. ভর্তি নিশ্চায়ন ফি জমা দিলেই মাইগ্রেশন হয়ে যাবে। আমাদের ওয়েবসাইটে ভর্তি নিশ্চায়ন ফি জমা দেয়ার বিস্তারিত নিয়ম বলা আছে। কাইন্ডলি দেখুন।

  2. sir ami 1-4 govt clg disi 5-10 non govt disi ekn amr 6 no ashche r ami confirm kore felsi
    Ekn amr ques holo migration e amk je clg dibe amk ki oitatey vorti hote hbe?? Oita cara amr ekn je clg ta ashche oita te ki vorti hote parbo na ami?

      1. Nobin hasan

        আমার ৪ নম্বর কলেজ এসেছে। পয়েন্ট ৪.০৬। বিভাগ মানবিক। একন কি মাইগ্রেশন করবো। নাকি ২য় চয়েস দিবো?

        1. যদি ১ নং চয়েজের কলেজ ছাড়া অন্য কলেজ চয়েজ দিতে চাও তাহলে মাইগ্রেশন না করে আবেদন করবে আর ১ নং কলেজে পড়তে চাইলে মাইগ্রেশন কর। ভাগ্যে থাকলে আসবে।

  3. amr 1st choice e chance hoice,ami confirm fee o dia dici, kinto akhn change kore felte chai..ami ki krte pari..??

  4. স্যার,আমি প্রথম পর্যায়ের প্রকাশিত ফলাফলে বান্দরবান ক্যান্ট পাবলিক কলেজে এসেছি এবং কনফার্মেশন ও করছি। আমার ইচ্ছা অন্তত হালিশহর ক্যানট কলেজে পডতে।
    প্রশ্ন-মাইগ্রেশনের জন্য কি করতে হবে?
    প্রশ্ন-কনফার্মেশন করলেও তৃতীয় ধাপে আবেদন করা যাবে?

    1. ১) মাইগ্রেশনের জন্য শুধু ভর্তি নিশ্চায়ন করতে হবে। ২) আর ভর্তি নিশ্চায়ন করলে নতুন করে আবেদন করার সুযোগ পাবে না।

  5. নিলয়

    আমার ১ম মেরিটে রেজাল্ট আসছে ৩ নাম্বার কলেজ।
    আমি ১ম নম্বর কলেজ এ পড়তে চাই। আমার রেজাল্ট ৪.৮৩ এবং ১ নম্বর কলেজ এ নুন্যতম পয়েন্ট চাইছে ৪.৭২।
    প্রশ্ন ১: আমি মাইগ্রেশন করবো?
    প্রশ্ন ২: মাইগ্রেশন এ যদি ১ম কলেজ না আসে তাহলে কি আবার আবেদন করতে হবে নাকি ৩য় কলেজ এই ভর্তি হতে পারবো?

    1. ১) মাত্র ০.১১ পয়েন্ট বেশি। এত কম নিয়ে চান্স পাওয়া কঠিন। তবে অসম্ভব নয়। ভাগ্য ভালো থাকলে চান্স পেয়ে যেতে পার।
      ২) যদি মাইগ্রেশন না করে ২য় পর্যায়ে আবার ঐ কলেজ ১ নম্বরে রেখে আবেদন কর। তাহলে কোনো লাভ নেই। যেই লাউ সেই কদু! উলটো টাকা যাবে। কারন মাইগ্রেশনও একটা আবেদনের মত, সুযোগ পেলে সেটা ২য় পর্যায়ে আবেদনের মত কাজ করবেই! আশাকরি বুঝাতে পেরেছি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!