তায়াম্মুম কখন করা যাবে?
তায়াম্মুম দুই কারণে করা যাবে। এক: যদি কেউ মুসাফির কিংবা শহরের বাহিরে থাকাবস্থায় পানি না পায় এবং তার ও শহরের (শহর মানে পানির স্থান বোঝানো হয়েছে) মাঝে এক মাইল বা ততোধিক দূরত্ব থাকে, তখন সে তায়াম্মুম করতে পারবে।
দুই: কেউ যদি পানি পেয়েও যায়, কিন্তু অসুস্থ থাকে এবং আশংকা করে যে, পানি ব্যবহার করলে, রোগ বেড়ে যাবে। তখন এমতাবস্থায় সে তায়াম্মুম করতে পারবে। তথ্যসূত্র ঃ- হেদায়া ১ম খন্ড।
কেউ পানি পাচ্ছে না, তবে পাওয়ার আশঙ্কা আছে এমতাবস্থায় সে কী করবে?
উত্তরঃ- যদি কোনো ব্যক্তি নামায পড়ার জন্য অযু করার পানি না পায়, কিন্তু পানি পাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এমতাবস্থায় সে আখেরি ওয়াক্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করবে এবং পানি পেয়ে গেলে অযু করে নামায পড়বে। আর, এটা করা মুস্তাহাব।অন্যথায়, তায়াম্মুম করে নামায পড়ে নিবে।যাতে দু’টি পবিত্রতার পূর্ণতমটি দ্বারা সালাত আদায় করা যায়। মূল ছয় গ্রন্থের বহির্ভূত বর্ণনা মতে, ঈমাম আবু হানিফা ও আবু ইউসুফ (রাহিমাহুমাল্লাহ)- এর মতে বিলম্ব করা ওয়াজিব।তথ্যসূত্র ঃ- হেদায়া ১ম খন্ড।
জুম্মার জামাত ছুটে যাওয়ার আশঙ্কায় তায়াম্মুম করা যাবে?
উত্তরঃ- জুম্মার জামাত ছুটে যাওয়ার আশঙ্কায় অযুর পরিবর্তে তায়াম্মুম করা যাবে না। বরং অযু করবে। তারপর, যদি জামাত পায়, তাহলে ভালো। অন্যথায়, যোহরের নামায পড়বে। এভাবে, প্রত্যেক নামাযের সময়ের ক্ষেত্রেও একই বিধান প্রযোজ্য। তথ্যসূত্র ঃ- হেদায়া ১ম খন্ড।
নামাযের সময় শেষ হওয়ার আশঙ্কায় তায়াম্মুম করা যাবে?
উত্তরঃ- নামাযের সময় শেষ হওয়ার আশঙ্কায় অযুর পরিবর্তে তায়াম্মুম করা যাবে না। বরং অযু করবে। তারপর, যদি সময় থাকে, তাহলে ওয়াক্তের নামায আদায় করবে নতুবা কাযা পড়বে। তথ্যসূত্র ঃ- হেদায়া ১ম খন্ড, তায়াম্মুম অধ্যায়।
জানাযা ও ঈদের জামাত ছুটে যাওয়ার আশঙ্কায় তায়াম্মুম করা যাবে কি?
উত্তরঃ- যদি কোনো ব্যক্তি জানাযার ওয়ালি তথা অভিভাবক না হয় এবং জানাযা শহর এলাকায় হয়, তাহলে সে জানাযা ছুটে যাওয়ার আশঙ্কায় তায়াম্মুম করে, জানাযার নামায পড়তে পারবে। কেননা, জানাযার কাযা নেই। আর, যদি সে ওয়ালি হয়, তাহলে সে পারবে না। কারন, তার অধিকার আছে জানাযার নামায দোহরানোর। দুই নং উত্তরঃ- এভাবে কোনো ব্যক্তি যদি এমন অবস্থায় উপস্থিত হয় যে, অযু করলে ঈদের জামাত পাবে না। তাহলে সে তায়াম্মুম করে নামায পড়তে পারবে। কেননা, ঈদের নামাযের কাযা নেই।
কিসের দ্বারা তায়াম্মুম করা যাবে?
উত্তরঃ-ঈমাম আবু হানিফা ও মুহাম্মদ (রাহিমাহুমাল্লাহ) বলেন, মৃত্তিকা বা মাটিজাতীয় যে কোনো বস্তু দ্বারা তায়াম্মুম করা জায়েয। যেমনঃ- মাটি, বালু, সাথারণ চুনা, সুরকি চুনা, পাথর, সুরমা ও হরিতাল. তথ্যসূত্র ঃ- হেদায়া ১ম খন্ড।
এক তায়াম্মুমে কত ওয়াক্ত নামায পড়া যাবে?
উত্তরঃ- হানাফিগণ বলেন যে, একবার তায়াম্মুম করে বা তায়াম্মুমকারী তার তায়াম্মুম দ্বারা যত ইচ্ছা ফরয, নফল নামায আদায় করতে পারবে।আর, ঈমাম শাফেয়ী (র) বলেন, তায়াম্মুমকারী প্রতিটি ফরয নামাযের জন্য আলাদা আলাদা তায়াম্মুম করতে হবে। তার মতে, এক তায়াম্মুমে বহু নফল নামায পড়া যায়, ফরয নামায নয়। কেননা, তা জরুরী অবস্থার তাহারাত।এর প্রতুত্তরে হানাফিগণ বলেন যে, পানির অনুপস্থিতিতে মাটি পবিত্রকারী। সুতরাং যতক্ষণ তার শর্ত বিদ্যমান থাকবে, ততক্ষণ তা কার্যকর থাকবে।তথ্যসূত্র ঃ- হেদায়া ১ম খন্ড।
তথ্যসূত্র ঃ- হেদায়া ১ম খন্ড, তায়াম্মুম অধ্যায়।