যেসব কারনে রোযা ভঙ্গ হয় না

উত্তরঃ নিম্নে যেসব কারনে রোযা ভঙ্গ হয় না। সেসব কারন প্রমান সহ দেওয়া হলোঃ

  •  কোনো রোযাদার রোযার কথা ভুলে গিয়ে পানাহার করলে তার রোযা নষ্ট হবে না। তবে রোযা স্মরণ হওয়া মাত্রই পানাহার ছেড়ে দিতে হবে। -সহীহ মুসলিম ১/২০২; আলবাহরুর রায়েক২/২৭১  হাদীস শরীফে এসেছে-  من نسي وهو صائم فأكل أو شرب فليتم صومه، فإنما أطمعه الله وسقاه. যে ব্যক্তি ভুলে আহার করল বা পান করল সে যেন তার রোযা পূর্ণ করে। কারণ আল্লাহই তাকে পানাহার করিয়েছেন।’ (সহীহ মুসলিম ১/২০২)
  •  চোখে ওষুধ-সুরমা ইত্যাদি লাগালে রোযার কোনো ক্ষতি হয় না। -সুনানে আবু দাউদ ১/৩২৩; রদ্দুল মুহতার ২/৩৯৫
  • রোযাদারের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করা মাকরূহ নয়। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৪/২০৮; আলবাহরুর রায়েক ২/২৮০
  • রোযার হালতে প্রয়োজনে জিহবা দ্বারা কোনো কিছুর স্বাদ নেওয়া বা প্রয়োজনে বাচ্চাদের জন্য খাদ্য চিবানো মাকরূহ নয়। তবে সতর্ক থাকতে হবে, যেন স্বাদ গলার ভেতরে চলে না যায়। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৪/২০৭; রদ্দুল মুহতার ২/৪১৬
  • রোযা অবস্থায়ও মিসওয়াক করা সুন্নত। এমনকি কাঁচা ডাল দ্বারা মিসওয়াক করাও মাকরূহ নয়। -সহীহ বুখারী ১/২৫৯ 
  • বীর্যপাত ঘটা বা সহবাসে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা না থাকলে স্ত্রীকে চুমু খাওয়া জায়েয। তবে কামভাবের সাথে চুমু খাওয়া যাবে না। আর যুবকদের যেহেতু এমন আশঙ্কা থাকে তাই তাদের বেঁচে থাকা উচিত। -মুসনাদে আহমদ ২/১৮০, ২৫০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০০
  • রাত্রে স্ত্রীসহবাস করলে বা স্বপ্নদোষ হলে সুবহে সাদিকের আগে গোসল করতে না পারলেও রোযার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে কোনো ওযর ছাড়া, বিশেষত রোযার হালতে দীর্ঘ সময় অপবিত্র থাকা অনুচিত।
  • অনিচ্ছাকৃত বমি হলে (মুখ ভরে হলেও) রোযা ভাঙ্গবে না। তেমনি বমি মুখে এসে নিজে নিজে ভেতরে চলে গেলেও রোযা ভাঙ্গবে না। -জামে তিরমিযী হাদীস: ৭২০; রদ্দুল মুহতার ২/৪১৪
  • শরীর বা মাথায় তেল ব্যবহার করলে রোযা ভাঙ্গবে না। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৪/৩১৩; আলবাহরুর রায়েক ২/১৭৩
  • শুধু যৌন চিন্তার কারণে বীর্যপাত হলে রোযা ভাঙ্গবে না। তবে এ কথা বলাই বাহুল্য যে, সব ধরনের কুচিন্তা তো এমনিতেই গুনাহ আর রোযার হালতে তো তা আরো বড় অপরাধ। -রদ্দুল মুহতার ২/৩৯৬
  • কামভাবের সাথে কোনো মহিলার দিকে তাকানোর ফলে কোনো ক্রিয়া-কর্ম ছাড়াই বীর্যপাত হলে রোযা ভাঙ্গবে না। তবে রোযা অবস্থায় স্ত্রীর দিকেও এমন দৃষ্টি দেওয়া অনুচিত। আর অপাত্রে কু-দৃষ্টি তো গুনাহ। যা রোযা অবস্থায় আরো ভয়াবহ। এতে ঐ ব্যক্তি রোযার ফযীলত ও বরকত থেকে মাহরূম হয়ে যায়। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৬/২৫৯; ফাতাওয়া শামী ২/৩৯৬
  •  স্বপ্নদোষ হলে রোযা ভাঙ্গবে না। -সুনানে কুবরা, বাইহাকী ৪/২৬৪
  • মশা-মাছি, কীট-পতঙ্গ ইত্যাদি অনিচ্ছাকৃত পেটের ভেতর ঢুকে গেলেও রোযা ভাঙ্গবে না।
  • অনুরূপ ধোঁয়া বা ধুলোবালি অনিচ্ছাকৃতভাবে গলা বা পেটের ভেতর ঢুকে গেলে রোযা ভাঙ্গবে না। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৬/৩৪৯; রদ্দুল মুহতার ২/৩৯৫
  • চোখের দু’ এক ফোটা পানি মুখে চলে গেলে রোযার ক্ষতি হয় না। তবে তা যদি গলার ভেতর চলে যায় তাহলে রোযা ভেঙ্গে যাবে। -আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৪৯
  •  সুস্থ অবস্থায় রোযার নিয়ত করার পর যদি অজ্ঞান বা অচেতন হয়ে যায় তাহলে রোযা নষ্ট হবে না। -সুনানে কুবরা, বাইহাকী ৪/২৩৫;

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!