যেসব কারণে রোযা ভেঙ্গে গেলে শুধু কাযা আদায় করতে হয়

উত্তরঃ যেসব কারণে রোযা ভেঙ্গে যায় এবং শুধু কাযা আদায় করতে হয়, সেসব কারন নিম্নে দেওয়া হলোঃ

  • অযু বা গোসলের সময় রোযার কথা স্মরণ থাকা অবস্থায়, অনিচ্ছাকৃতভাবে গলার ভেতর পানি চলে গেলে রোযা ভেঙ্গে যাবে। তাই রোযা অবস্থায় অযু-গোসলের সময় নাকের নরম স্থানে পানি পৌঁছানো এবং গড়গড়াসহ কুলি করবে না। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৩৬৩; ফাতাওয়া শামী ২/৪০১
  • যা সাধারণত আহারযোগ্য নয় বা কোনো উপকারে আসে না, তা খেলেও রোযা ভেঙ্গে যাবে এবং কাযা করতে হবে। -সহীহ বুখারী ১/২৬০ (তা’লীক); রদ্দুল মুহতার ২/৪১০
  • হস্তমৈথুনে বীর্যপাত হলে রোযা ভেঙ্গে যাবে।    শাইখ ইবনে উছাইমীন বলেন: “যদি রোজাদার ব্যক্তি হস্তমৈথুন করে এবং বীর্যপাত হয় তাহলে তার রোজা ভেঙ্গে যাবে। যেদিন হস্তমৈথুন করেছে তাকে সেদিনের রোজা কাযা করতে হবে। তবে তাকে কাফফারা দিতে হবে না। কারণ কাফফারা শুধু সহবাসের মাধ্যমে রোজা ভঙ্গ করলে সেক্ষেত্রে ফরজ হয়।তাকে তার কৃতপাপের জন্য তওবা করতে হবে।”  [ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম, পৃষ্ঠা-৪৭৮, সহীহ বুখারী ১/২৫৪; ফাতাওয়া শামী ২/৩৯৯]
  • দাঁত থেকে রক্ত বের হয়ে যদি তা থুথুর সাথে ভেতরে চলে যায় তবে রক্তের পরিমাণ থুথুর সমান বা বেশি হলে রোযা ভেঙ্গে যাবে। -রদ্দুল মুহতার ২/৩৯৬
  • মুখে বমি চলে আসার পর ইচ্ছাকৃতভাবে গিলে ফেললে রোযা ভেঙ্গে যাবে। যদিও তা পরিমাণে অল্প হয়। আদ্দুররুল মুখতার ২/৪১৫
  • রোযা অবস্থায় হায়েয বা নেফাস শুরু হলে রোযা ভেঙ্গে যাবে। পরে তা কাযা করতে হবে। -সহীহ বুখারী ১/৪৪; আননুতাফ ফিল ফাতাওয়া ১০০
  • পেটের এমন ক্ষতে ওষুধ লাগালে রোযা ভেঙ্গে যাবে, যা দিয়ে ওষুধ পেটের ভেতর চলে যায়। বিশেষ প্রয়োজনে এমন ক্ষতে ওষুধ লাগাতে হলে পরে সে রোযার কাযা করে নিতে হবে। -রদ্দুল মুহতার ২/৪০২
  •  সুবহে সাদিকের পর সাহরীর সময় আছে ভেবে পানাহার বা স্ত্রীসঙ্গম করলে রোযা ভেঙ্গে যাবে। তেমনি ইফতারির সময় হয়ে গেছে ভেবে সূর্যাস্তের পূর্বে ইফতার করে নিলে রোযা নষ্ট হয়ে যাবে। -আলবাহরুর রায়েক ২/২৯১
  • মলদ্বারের ভেতর ওষুধ বা পানি ইত্যাদি গেলে রোযা ভেঙ্গে যাবে। -রদ্দুল মুহতার ২/৪০২
  • অনিচ্ছাকৃত বমি হওয়ার কারণে রোযা নষ্ট হয়ে গেছে মনে করে রোযা ভেঙ্গে ফেললে কাযা করতে হবে। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৬/১৪৯; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৬/১৫০; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪০১
  • নাকে ওষুধ বা পানি দিলে তা যদি গলার ভেতরে চলে যায় তাহলে রোযা ভেঙ্গে যাবে এবং কাযা করতে হবে।
  • রোযা রাখা অবস্থায় ভুলবশত পানাহার করে রোযা নষ্ট হয়ে গেছে ভেবে ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করলে রোযা নষ্ট হয়ে যাবে এবং কাযা করা জরুরি হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!