একাদশ শ্রেণিতে কলেজ নির্বাচন করার নিয়ম : যেহেতু একাদশ শ্রেণিতে ৩ পর্যায়ে আবেদন করা যায়, তাই প্রত্যেক বার আবেদন করার সময় ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। আমি তানভির (Edu Masail – এডু মাসাইল এর এডমিন) আছি তোমাদের পাশে। এখানে আমি আলাদাভাবে সব পর্যায়ে কলেজ নির্বাচন করার কিছু পদ্ধতি বা নিয়ম বলব যেগুলো অনুসরণ করলে আশাকরি তুমি তোমার পছন্দের কলেজে ৯৯% চান্স পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। তবে আমি শুধু নিয়ম বলে দিব, কিন্তু আসল কাজ তোমাদের করতে হবে। তাহলে চলো কলেজে চান্স পাওয়ার সহজ উপায় জেনে নেওয়া যাক :
একাদশ শ্রেণিতে কলেজ নির্বাচন করার নিয়ম
একাদশ শ্রেণিতে কলেজ নির্বাচন করার আগে তোমাকে কয়েকটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে। 01 : তুমি কোন কলেজে পড়তে চাও? 02 : শহরের কলেজ নাকি উপশহরে? 03 : আবার সরকারি নাকি বেসরকারি? 04 : কোন গ্রুপে আবেদন করতে চাও? 05 : কয়টি কলেজে আবেদন করবে? এ সমস্ত বিষয় মাথায় রেখে আবেদন করতে হবে। চলো প্রত্যেক পর্যায়ে কলেজ নির্বাচন নিয়ম জেনে নেই :
কিছু কথা জেনে রাখা জরুরি
একটা কলেজে চান্স পেতে হলে অনেক গুলো ধাপ পারি দিয়ে আসতে হয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে পয়েন্ট, কলেজের মান ও আসন সংখ্যা, আবেদনকারীর সংখ্যা ও আবেদনকারীর মার্ক। মূলত এই পাচটা ধাপ অতিক্রম করেই একজন শিক্ষার্থীকে কোনো একটা কলেজে চান্স পাইতে হয়।
তাই কেউ-ই নির্দিষ্ট করে কোনো কলেজের মানদও বলতে পারবে না যে তুমি এত পয়েন্ট পেলে তুমি অমুক কলেজে চানস পেয়ে যাবে। এটা কেউ শিওর হয়ে বলতে পারবে। অবশ্য নিম্ন মানের কলেজ হলে অনেকটা শিওর হয়ে বলা যায় কিন্তু ভালো মানের কলেজে যায় না। যেমন ;
মনেকর একটা কলেজে ৫০ টা আসন আছে। এখন ঐ কলেজে ১০০ জন আবেদন করেছে, তন্মধ্যে জিপিএ ৫ ধারী ৬০ জন। এখন কি ঐ ৬০ জন চান্স পাবে? অবশ্যই না। তাহলে কিভাবে ৬০ জনের মধ্যে ৫০ জনকে চান্স দেওয়া হবে? উত্তর হচ্ছে যার এসএসসিতে মার্ক বেশি থাকবে তাকেই ১ নম্বর মেরিট লিস্টে রাখবে। এভাবে যার যত মার্ক বেশি থাকবে সে তত আগে মেরিট লিস্টে স্থান পাবে। এভাবে ৫০ জনকে চান্স দেয়া হবে।
তাছাড়া দুজনের টোটাল মার্ক সমান হয়ে গেলে তাদের আবেদনকৃত বিষয়ের মধ্যে তুলনা করা হবে। মনে করুন দুজনই জিপিএ ৫ পেয়েছে এবং তাদের উভয়েরই ssc তে টোটাল ৯০০ মার্ক। এখন তাদের মধ্যে কাকে চান্স দেয়া হবে? এমতাবস্থায় তারা যে যে গ্রুপে আবেদন করেছে ঐ গ্রুপের বিষয়ে এসএসসিতে যে যত বেশি মার্ক পাবে সেই চান্স পাবে। আশাকরি তোমাদের সবাইকে কলেজে চান্স পাওয়ার ব্যাপারে একটা ধারণা দিতে পারছি। এখন
১ম পর্যায়ে যেভাবে কলেজ নির্বাচন করবে
তুমি যদি শহরের কোনো সরকারি কলেজে পড়তে চাও তাহলে তোমাকে কমপক্ষে এসএসসি তে 4.50 পয়েন্ট পেতে হবে। কেননা শহররের কলেজ গুলোর মান ভালো। তবে তুমি 4.50 পেলেই শহরের কোনো সরকারি কলেজে তোমার চান্স হয়ে যাবে বিষয়টা এমন নয়। বরং আমি মনেকরি 4.50 পয়েন্ট দিয়ে কমপক্ষে শহরের কোনো সরকারি কলেজে চান্স পাওয়ার আশা করা যায়।
আর যদি উপশহর বা উপজেলার কোনো সরকারি কলেজ হতে চাও তাহলে তোমাকে কমপক্ষে 4.00 পেতে হবে। তাছাড়া চান্স পাওয়া শুধু পয়েন্টের উপর নির্ভর করে না। উপরের উদাহরণ টা বুঝতে পারলে বুঝে যাবে।
এবার আসি শহরের বেসরকারি কলেজ নিয়ে। তুলনামূলকভাবে বেসরকারি কলেজে চান্স পাওয়া ইজি। তবে এরপরও তোমাকে ভালো মানের শহরের বেসরকারি কলেজে আবেদন করতে হলে কমপক্ষে 4.00 পেতে হবে। যদি উপশহর বা উপজেলার কোনো বেসরকারি কলেজ হয় তাহলে 3.00 এর কম পেলেও চান্স হবে।
এবার আসি বিভাগ বা গ্রুপ নিয়ে। বিভিন্ন কলেজের ন্যূনতম যোগ্যতার তালিকায় দেখবে যে বিজ্ঞান বিভাগের জন্য কত পয়েন্ট আবার মানবিকের কত। প্রায় সময় বিজ্ঞান বিভাগের ক্ষেত্রে পয়েন্ট বেশি থাকে। তাই তুমি যে কলেজের যে বিভাগে আবেদন করবে তা সম্বন্ধ্যে আগে জেনে নিবে। নিম্নের লিংক থেকে দেশের প্রতিটি কলেজের ন্যূনতম যোগ্যতা ও সিট (আসন) সংখ্যা দেখে নিও।
সিদ্ধান্ত
এখন তোমার পয়েন্ট যদি ভালো হয় অথবা মোটামোটি ভালো থাকে তাহলে যেকোন সরকারি কলেজে আবেদন করতে পারবে। কেননা সর্বোচ্চ ১০ টি কলেজে আবেদন করা যাবে। তবে আমি সাজেস্ট করবো ভালো মানের ৫টি কলেজে আবেদন করবে। অবশ্য এমন কলেজে আবেদন করবে যাতে যেকোনো দুইটির একটিতে আপনার চান্স হবে আশা রাখতে পার।
তাই তোমাকে আগে নিজের পয়েন্ট ও কলেজের ন্যূনতম যোগ্যতার সাথে হিসাব নিকাশ করে বাড়িতে একটি তালিকা বানাবে। তারপর আবেদন করতে যাবে। যাতে ১০ টি কলেজের মধ্যে ন্যূনতম একটি কলেজে যেন তোমার চান্স ১০০% হয় এই আশা রাখতে পার।
এ জন্য নিম্ন মানের ৩ টি কলেজ ৮, ৯, ও ১০ নম্বরে চয়েজ দিতে পার। এতে করে লাভই হবে। কারন চান্স না হওয়ার হতাশা থেকে বাচবে। আর কথার কথা ৮ নম্বর কলেজে চান্স পাইলেও পরে তুমি মাইগ্রেশন করতে পারবে। এরপর তুমি তোমার যোগ্যতা অনুযায়ী চান্স পাবে। কারো প্রতি কোনো অবিচার করা হবে না।
২য় পর্যায়ে যেভাবে কলেজ নির্বাচন করবে
২য় পর্যায়ে আবেদন করার আগে সর্বপ্রথম তোমাকে যে কাজটি করতে হবে তা হচ্ছে কলেজের খালি আসন (সিট) সংখ্যা জেনে নেওয়া। এ জন্য আমাদের ওয়েবসাইটের এই পোস্ট হতে বাংলাদেশের সকল কলেজের ফাকা (খালি) আসন সংখ্যা জেনে নিতে পারবে। তবে ঐ পোস্টে পিডিএফ আকারে ফাইল দেওয়া হয়েছে, যদি কারোর ছবির দরকার তাহলে আমাদের এই ফেসবুকে গ্রুপে পোস্ট করলে আমি দিয়ে দিব। কেননা একেকটি পিডিএফে অনেক পেইজ থাকে তাই ওয়েবসাইট বা অন্য কোথাও সব ছবি দেওয়া কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
দ্বিতীয়ত যে কাজটি করতে হবে তা হচ্ছে প্রত্যেক কলেজের ন্যূনতম জিপিএ বা যোগ্যতা জেনে নিবে। অর্থাৎ তুমি যে যে কলেজ চয়েস দিতে চাও সেগুলোর ন্যূনতম যোগ্যতা ও আসন সংখ্যা দেখে নিবে এবং খাতায় নোট করে রাখবে। এরপর তিন নম্বরে ঐ কলেজগুলো তোমার জিপিএ এর ভিত্তিতে সাজাবে।
মনেকর, তোমার জিপিএ 4.50 তাহলে যেসব কলেজ 4.50 নিবে, সেগুলো উপরে রেখে ক্রমান্বয়ে ১, ২, ৩…. এভবাবে তালিকা বানাবে। এতে তুমি যদি ভাব প্রথম চয়েস নিম্ন মানের কলেজ তাহলে তাও পারবে। এভাবে সরকারি-বেসরকারি কোনো ফ্যাক্ট না
সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ পয়েন্ট হচ্ছে যদি তুমি দেখ, প্রথম চয়েস যে কলেজ দিবে সেটা সরকারি + শহরে অবস্থিত এবং সিট সংখায়ও ৫০ এর অধীক নয়, তাহলে এই কলেজে চান্স পেতে টাফ হবে। তবে তুমি চাইলে এরকম কলেজ ২-৩ টা চয়েস লিস্টের প্রথমে দিতে পারবে। কেননা ১০ টি কলেজে যেহেতু আবেদন করার সুযোগ আছে।
এরপর তুমি ধারাবিহিকভাবে তোমার জিপিএ ও কলেজের খালি আসন সংখ্যা অনুযায়ি বাকি কলেজ সিলেক্ট করবে। তবে পয়েন্ট বেশি খারাপ হলে মানে 2.50 এরকম হলে শহরের কোনো কলেজে আবেদন না করাই ভালো। এতে তুমি উপজেলা কেন্দ্রিক কোনো সরকারি কলেজে আবেদন করতে পার।
আরও দেখুন : একাদশ শ্রেণিতে আবেদন করার নিয়ম ২০২৩
সময় স্বল্পতার জন্য মাত্র ২ টা ধাপের নিয়ম দিলাম। হাতে সময় থাকলে এবং প্রয়োজন হলে বাকি অংশ বর্ণনা করব ইন-শা-আল্লাহ!